অপরাধ স্বীকার করে জরিমানা দিচ্ছে বোয়িং

নাগরিক ডেস্ক
০৯ জুলাই, ২০২৪, 5:09 PM

অপরাধ স্বীকার করে জরিমানা দিচ্ছে বোয়িং
ভার্জিনিয়া : দুটি দুর্ঘটনার নিষ্পত্তি চুক্তিতে জালিয়াতি করার ফৌজদারি অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। এ বিষয়ে তদন্তের পর গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দুটি শর্ত দিয়েছিল। দোষ স্বীকার কিংবা ফৌজদারি মামলার যেকোনো একটি বোয়িংকে বেছে নেয়ার কথা বলা হয়েছিল তখন। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুটি ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ৩৪৬ যাত্রী নিহত হন। মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছে, এসব ঘটনার তদন্তকে প্রভাবিত করতে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিল বোয়িং। সাম্প্রতিক শর্ত অনুযায়ী এতে এয়ারক্রাফট জায়ান্টটি ২৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার জরিমানা দিতে রাজি হয়েছে।
বোয়িংয়ের সামনে দুটি বিকল্প উপস্থাপনের আগে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে বিষয়টি অবহিত করে মার্কিন বিচার বিভাগ। তারা নতুন এ চুক্তিকে ‘সুইটহার্ট ডিল’ অভিহিত করে সমালোচনা করেছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের ১৩ মিনিট পরে জাভা সাগরে লায়ন এয়ারের একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ যাত্রীর সবাই নিহত হন। পরের বছরের মার্চে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে উড্ডয়নের ৬ মিনিট পর বিধ্বস্ত হন। বিমানে থাকা ১৫৭ জনের সবাই নিহত হন। দুটি দুর্ঘটনার জন্যই ত্রুটিপূর্ণ ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমকে দায়ী করা হয়।
২০২১ সালে বোয়িং ও মার্কিন বিচার বিভাগের মধ্যে বিচার মুলতবি চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় বোয়িং তাদের নিম্নপদের দুই কর্মচারীকে প্রতারণার জন্য দোষারোপ করে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়। এর বিনিময়ে বোয়িংকে ফৌজদারি অভিযোগ থেকে রেহাই দেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং তিন বছরের জন্য স্বচ্ছতা বজায় রাখাসহ নিয়মিত প্রতিবেদন জমা দেয়ার শর্ত দেয়। কিন্তু গত জানুয়ারিতে নিষ্পত্তির সময়কাল শেষ হওয়ার অল্প কিছুদিন আগে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয় আলাস্কা এয়ারলাইনসে একটি বোয়িং। মাঝ আকাশে দরজা খুলে পড়ার পর জেটটি অবতরণে বাধ্য হয়েছিল। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও বোয়িংয়ের সুরক্ষা মানের কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত নতুন মাত্রা লাভ করে। এরপর গত মে মাসে মার্কিন বিচার বিভাগ জানায়, কোম্পানিটি চুক্তির শর্তাবলি লঙ্ঘন করেছে।
২০১৮ ও ২০১৯ সালের দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী পল ক্যাসেল জানিয়েছেন, তারা এর চেয়েও বেশি কিছু আশা করেছিলেন। জুনে সরকারের কাছে পাঠানো চিঠিতে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি জরিমানা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ফাউন্ডেশন ফর এভিয়েশন সেফটির নির্বাহী পরিচালক ও বোয়িংয়ের সাবেক সিনিয়র ম্যানেজার এড পিয়ারসন এ চুক্তিকে ‘গুরুতরভাবে হতাশাজনক’ ও ‘বিচার হিসেবে ভয়ানক চুক্তি’ বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, এতে অভিযুক্তদের জবাবদিহির পরিবর্তে জেল থেকে মুক্তির আরেকটি সুযোগ দেয়া হয়েছে।
নাগরিক ডেস্ক
০৯ জুলাই, ২০২৪, 5:09 PM

ভার্জিনিয়া : দুটি দুর্ঘটনার নিষ্পত্তি চুক্তিতে জালিয়াতি করার ফৌজদারি অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। এ বিষয়ে তদন্তের পর গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দুটি শর্ত দিয়েছিল। দোষ স্বীকার কিংবা ফৌজদারি মামলার যেকোনো একটি বোয়িংকে বেছে নেয়ার কথা বলা হয়েছিল তখন। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুটি ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ৩৪৬ যাত্রী নিহত হন। মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছে, এসব ঘটনার তদন্তকে প্রভাবিত করতে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিল বোয়িং। সাম্প্রতিক শর্ত অনুযায়ী এতে এয়ারক্রাফট জায়ান্টটি ২৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার জরিমানা দিতে রাজি হয়েছে।
বোয়িংয়ের সামনে দুটি বিকল্প উপস্থাপনের আগে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে বিষয়টি অবহিত করে মার্কিন বিচার বিভাগ। তারা নতুন এ চুক্তিকে ‘সুইটহার্ট ডিল’ অভিহিত করে সমালোচনা করেছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের ১৩ মিনিট পরে জাভা সাগরে লায়ন এয়ারের একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ যাত্রীর সবাই নিহত হন। পরের বছরের মার্চে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে উড্ডয়নের ৬ মিনিট পর বিধ্বস্ত হন। বিমানে থাকা ১৫৭ জনের সবাই নিহত হন। দুটি দুর্ঘটনার জন্যই ত্রুটিপূর্ণ ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমকে দায়ী করা হয়।
২০২১ সালে বোয়িং ও মার্কিন বিচার বিভাগের মধ্যে বিচার মুলতবি চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় বোয়িং তাদের নিম্নপদের দুই কর্মচারীকে প্রতারণার জন্য দোষারোপ করে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়। এর বিনিময়ে বোয়িংকে ফৌজদারি অভিযোগ থেকে রেহাই দেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং তিন বছরের জন্য স্বচ্ছতা বজায় রাখাসহ নিয়মিত প্রতিবেদন জমা দেয়ার শর্ত দেয়। কিন্তু গত জানুয়ারিতে নিষ্পত্তির সময়কাল শেষ হওয়ার অল্প কিছুদিন আগে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয় আলাস্কা এয়ারলাইনসে একটি বোয়িং। মাঝ আকাশে দরজা খুলে পড়ার পর জেটটি অবতরণে বাধ্য হয়েছিল। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও বোয়িংয়ের সুরক্ষা মানের কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত নতুন মাত্রা লাভ করে। এরপর গত মে মাসে মার্কিন বিচার বিভাগ জানায়, কোম্পানিটি চুক্তির শর্তাবলি লঙ্ঘন করেছে।
২০১৮ ও ২০১৯ সালের দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী পল ক্যাসেল জানিয়েছেন, তারা এর চেয়েও বেশি কিছু আশা করেছিলেন। জুনে সরকারের কাছে পাঠানো চিঠিতে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি জরিমানা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ফাউন্ডেশন ফর এভিয়েশন সেফটির নির্বাহী পরিচালক ও বোয়িংয়ের সাবেক সিনিয়র ম্যানেজার এড পিয়ারসন এ চুক্তিকে ‘গুরুতরভাবে হতাশাজনক’ ও ‘বিচার হিসেবে ভয়ানক চুক্তি’ বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, এতে অভিযুক্তদের জবাবদিহির পরিবর্তে জেল থেকে মুক্তির আরেকটি সুযোগ দেয়া হয়েছে।