পর্যটন ও ভ্রমণ সূচকে পিছিয়ে বাংলাদেশ
নাগরিক প্রতিবেদন
২৩ মে, ২০২৪, 12:08 PM
পর্যটন ও ভ্রমণ সূচকে পিছিয়ে বাংলাদেশ
ভ্রমণ ও পর্যটন সূচকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক জরিপে দেখা গেছে, এই সূচকে বিশ্বের ১১৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। এ ছাড়া এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার শেষে। যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই সূচক প্রণয়ন করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। দ্বিবার্ষিক এই সূচকে বিভিন্ন উপাদান ও সরকারের নীতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সরকার যথাযথ নীতি প্রণয়ন করলে পর্যটন ও ভ্রমণ খাতের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন হতে পারে; পরিণামে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নেও এই খাত ভূমিকা পালন করতে পারে।
এই সূচকে ৭ পয়েন্টের মধ্যে ৩.১৯ পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে দেখা যাচ্ছে, কেবল এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার যে পাঁচটি দেশ এই সূচকে স্থান পেয়েছে, তাদের মধ্যেও বাংলাদেশ সবার পেছনে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার আগে আছে ভারত। ৭-এর মধ্যে তারা পেয়েছে ৪.২৫। সামগ্রিক ক্রমতালিকায় ভারতের অবস্থান ৩৯। এরপর আছে শ্রীলঙ্কা। ৩.৬৯ পয়েন্ট নিয়ে ক্রমতালিকায় ৭৬তম স্থানে আছে তারা। ৩.৪১ পয়েন্ট নিয়ে ১০১তম স্থানে আছে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত পাকিস্তান। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পর্যটন নেপালের রাজস্ব আয়ের মূল উৎস হলেও দেশটির প্রাপ্ত নম্বর মাত্র ৩.৩৪, অবস্থান ১০৫তম।
এই সূচকে ১৭টি মাত্রা, ১৭টি স্তম্ভ ও ১০২টি পৃথক নির্দেশক ব্যবহার করা হয়েছে। এসব নির্দেশক আবার বিভিন্ন স্তম্ভের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। মাত্রাগুলো হলো সহায়ক পরিবেশ, ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক নীতি, অবকাঠামো ও সেবা, পর্যটন ও ভ্রমণের সম্পদ এবং দীর্ঘস্থায়িত্ব। যেসব মানদণ্ডে এই বিচার করা হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো করেছে পর্যটন ও ভ্রমণবিষয়ক সম্পদের মানদণ্ডে। সেটা হলো, যেসব বিষয় মানুষকে নির্দিষ্ট কোনো স্থানে ভ্রমণে উত্সাহী করে, যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক আকর্ষণ এবং সরাসরি ঠিক বিনোদনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন বিষয়ের উপস্থিতি।
এর অর্থ হলো, বাংলাদেশে ভ্রমণ ও পর্যটনের যথেষ্ট উপকরণ থাকলেও পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতার কারণে পর্যটকদের আকর্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। যেমন—বিশ্বের বৃহত্তম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত আর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের কথা চলে আসে। কিন্তু এ রকম আকর্ষণীয় স্থান থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ তেমন একটা পর্যটক আকর্ষণ করতে পারছে না। এর জন্য আনুষঙ্গিক আয়োজন থাকা দরকার, তা না থাকার কারণে এসব স্থানের আকর্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। সে জন্য এই ‘পর্যটন ও ভ্রমণের স্থায়িত্ব’ মাত্রায় সবচেয়ে খারাপ করেছে বাংলাদেশ।
যথারীতি সূচকের শীর্ষে উন্নত দেশগুলোর অবস্থান। সবার প্রথমে আছে যুক্তরাষ্ট্র। ৭-এর মধ্যে এই দেশ পেয়েছে ৫.২৪। এরপর ৫.১৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ইউরোপের দেশ স্পেন। ৫.৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে জাপান। তালিকায় শেষ তিন স্থানে আছে ক্যামেরুন, সিয়েরা লিওন ও মালি। ২.৯৯ পয়েন্ট নিয়ে ১১৭তম স্থানে আছে ক্যামেরুন; ২.৮৯ পয়েন্ট নিয়ে ১১৮তম স্থানে আছে সিয়েরা লিওন আর ২.৭৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার শেষে বা ১১৯তম স্থাপনে আছে মালি। মহামারির পর মানুষ আবার ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছে। বলা যায়, এই প্রবণতা আগের চেয়ে বেড়েছে। ফলে পর্যটন খাতের আকার বাড়ছে। বিশ্বভ্রমণ ও পর্যটন কাউন্সিলের (ডব্লিউটিটিসি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটন খাত যেভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তাতে ২০৩৩ সালের মধ্যে বৈশ্বিক পর্যটন খাতের আকার ১৫.৫ ট্রিলিয়ন বা ১৫ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে তখন এই খাতের হিস্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১১.৫ শতাংশ।
নাগরিক প্রতিবেদন
২৩ মে, ২০২৪, 12:08 PM
ভ্রমণ ও পর্যটন সূচকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক জরিপে দেখা গেছে, এই সূচকে বিশ্বের ১১৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। এ ছাড়া এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার শেষে। যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই সূচক প্রণয়ন করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। দ্বিবার্ষিক এই সূচকে বিভিন্ন উপাদান ও সরকারের নীতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সরকার যথাযথ নীতি প্রণয়ন করলে পর্যটন ও ভ্রমণ খাতের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন হতে পারে; পরিণামে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নেও এই খাত ভূমিকা পালন করতে পারে।
এই সূচকে ৭ পয়েন্টের মধ্যে ৩.১৯ পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে দেখা যাচ্ছে, কেবল এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার যে পাঁচটি দেশ এই সূচকে স্থান পেয়েছে, তাদের মধ্যেও বাংলাদেশ সবার পেছনে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার আগে আছে ভারত। ৭-এর মধ্যে তারা পেয়েছে ৪.২৫। সামগ্রিক ক্রমতালিকায় ভারতের অবস্থান ৩৯। এরপর আছে শ্রীলঙ্কা। ৩.৬৯ পয়েন্ট নিয়ে ক্রমতালিকায় ৭৬তম স্থানে আছে তারা। ৩.৪১ পয়েন্ট নিয়ে ১০১তম স্থানে আছে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত পাকিস্তান। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পর্যটন নেপালের রাজস্ব আয়ের মূল উৎস হলেও দেশটির প্রাপ্ত নম্বর মাত্র ৩.৩৪, অবস্থান ১০৫তম।
এই সূচকে ১৭টি মাত্রা, ১৭টি স্তম্ভ ও ১০২টি পৃথক নির্দেশক ব্যবহার করা হয়েছে। এসব নির্দেশক আবার বিভিন্ন স্তম্ভের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। মাত্রাগুলো হলো সহায়ক পরিবেশ, ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক নীতি, অবকাঠামো ও সেবা, পর্যটন ও ভ্রমণের সম্পদ এবং দীর্ঘস্থায়িত্ব। যেসব মানদণ্ডে এই বিচার করা হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো করেছে পর্যটন ও ভ্রমণবিষয়ক সম্পদের মানদণ্ডে। সেটা হলো, যেসব বিষয় মানুষকে নির্দিষ্ট কোনো স্থানে ভ্রমণে উত্সাহী করে, যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক আকর্ষণ এবং সরাসরি ঠিক বিনোদনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন বিষয়ের উপস্থিতি।
এর অর্থ হলো, বাংলাদেশে ভ্রমণ ও পর্যটনের যথেষ্ট উপকরণ থাকলেও পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতার কারণে পর্যটকদের আকর্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। যেমন—বিশ্বের বৃহত্তম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত আর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের কথা চলে আসে। কিন্তু এ রকম আকর্ষণীয় স্থান থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ তেমন একটা পর্যটক আকর্ষণ করতে পারছে না। এর জন্য আনুষঙ্গিক আয়োজন থাকা দরকার, তা না থাকার কারণে এসব স্থানের আকর্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। সে জন্য এই ‘পর্যটন ও ভ্রমণের স্থায়িত্ব’ মাত্রায় সবচেয়ে খারাপ করেছে বাংলাদেশ।
যথারীতি সূচকের শীর্ষে উন্নত দেশগুলোর অবস্থান। সবার প্রথমে আছে যুক্তরাষ্ট্র। ৭-এর মধ্যে এই দেশ পেয়েছে ৫.২৪। এরপর ৫.১৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ইউরোপের দেশ স্পেন। ৫.৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে জাপান। তালিকায় শেষ তিন স্থানে আছে ক্যামেরুন, সিয়েরা লিওন ও মালি। ২.৯৯ পয়েন্ট নিয়ে ১১৭তম স্থানে আছে ক্যামেরুন; ২.৮৯ পয়েন্ট নিয়ে ১১৮তম স্থানে আছে সিয়েরা লিওন আর ২.৭৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার শেষে বা ১১৯তম স্থাপনে আছে মালি। মহামারির পর মানুষ আবার ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছে। বলা যায়, এই প্রবণতা আগের চেয়ে বেড়েছে। ফলে পর্যটন খাতের আকার বাড়ছে। বিশ্বভ্রমণ ও পর্যটন কাউন্সিলের (ডব্লিউটিটিসি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটন খাত যেভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তাতে ২০৩৩ সালের মধ্যে বৈশ্বিক পর্যটন খাতের আকার ১৫.৫ ট্রিলিয়ন বা ১৫ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে তখন এই খাতের হিস্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১১.৫ শতাংশ।