যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমছেই
নাগরিক প্রতিবেদন
১২ মে, ২০২৪, 2:07 PM
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কমছেই
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেই চলেছে। তবে বাড়ছে ভিয়েতনামের। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ১৭৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭.৬৮ শতাংশ কম। গত বছর শেষে রপ্তানি কমার হার ছিল ২৫ শতাংশ। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
অটেক্সা’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ হাজার ৮০৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭.১৪ শতাংশ কম। তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা মোট ৯ হাজার ৯৮৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছিল। ২০২৩ সালে সেটি ২২ শতাংশ কমে যায়। ওই বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৭ হাজার ৭৮৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এই বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চলতি বছর থেকে ব্যবসা কিছুটা বাড়তে থাকে। এতে ভিয়েতনামের ব্যবসা বাড়লেও শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকি চার দেশ অর্থাৎ চীন, বাংলাদেশ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি কমেছে। এর মধ্যে চীনের রপ্তানি কমার হার অন্য তিন দেশের তুলনায় কম, ০.৭১ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চীন ও ভিয়েতনাম থেকেই প্রায় ৪০ শতাংশ তৈরি পোশাক আমদানি করছে। আর বাংলাদেশ থেকে করে ৯ শতাংশ। এই বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার হিস্যা যথাক্রমে ৫.৬৯ ও ৫.২৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়ে চীন ৩৪৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম ৩৪০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। অর্থাৎ চীনের থেকে মাত্র ৫ কোটি ডলারের কম রপ্তানি করেছে ভিয়েতনাম। চীন ও ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণ যথাক্রমে ২১ ও ১৯ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনামের রপ্তানি যখন বাড়ছে, তখন বাংলাদেশের কমছে। চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে বাংলাদেশ ১৭৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে দেশটিতে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭.৬৮ শতাংশ কম। গত বছর শেষে রপ্তানি কমার হার ছিল ২৫ শতাংশ। তার মানে বড় এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে।
পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরেকটি দুশ্চিন্তা আছে। বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশ নিয়ে তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন (ইউএসআইটিসি)। কীভাবে দেশগুলো মার্কিন বাজারের এত বড় অংশ দখল করে রেখেছে, তা তথ্যানুসন্ধান করছে এই কমিশন। বাংলাদেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চতুর্থ ও পঞ্চম শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ যথাক্রমে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানিও কমেছে। এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ভারত ১২২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ কম। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে রপ্তানি করেছে ১০২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তাদের রপ্তানি কমেছে ১৪ শতাংশ।
পোশাক রপ্তানিকারকরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের চাহিদা কমেছে এবং খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো তাদের মজুত করা পণ্য বিক্রি করতে পারেনি। এ ছাড়া কার্যাদেশ কম এসেছে। ক্রেতারা স্থানীয় সরবরাহকারীদের পণ্যের দাম কম দিচ্ছেন। তারা বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও উচ্চ ব্যাংক সুদের হারের কারণে বিক্রি কমছে। ক্রেতারা এখনো অপ্রয়োজনীয় পণ্যের তুলনায় মৌলিক পণ্যগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তবে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও যুক্তরাজ্যের মতো নতুন বাজারের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশে বাংলাদেশ ভালো করছে।
নাগরিক প্রতিবেদন
১২ মে, ২০২৪, 2:07 PM
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেই চলেছে। তবে বাড়ছে ভিয়েতনামের। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ১৭৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭.৬৮ শতাংশ কম। গত বছর শেষে রপ্তানি কমার হার ছিল ২৫ শতাংশ। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
অটেক্সা’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ হাজার ৮০৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭.১৪ শতাংশ কম। তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা মোট ৯ হাজার ৯৮৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছিল। ২০২৩ সালে সেটি ২২ শতাংশ কমে যায়। ওই বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৭ হাজার ৭৮৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এই বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চলতি বছর থেকে ব্যবসা কিছুটা বাড়তে থাকে। এতে ভিয়েতনামের ব্যবসা বাড়লেও শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকি চার দেশ অর্থাৎ চীন, বাংলাদেশ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি কমেছে। এর মধ্যে চীনের রপ্তানি কমার হার অন্য তিন দেশের তুলনায় কম, ০.৭১ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চীন ও ভিয়েতনাম থেকেই প্রায় ৪০ শতাংশ তৈরি পোশাক আমদানি করছে। আর বাংলাদেশ থেকে করে ৯ শতাংশ। এই বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার হিস্যা যথাক্রমে ৫.৬৯ ও ৫.২৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়ে চীন ৩৪৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম ৩৪০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। অর্থাৎ চীনের থেকে মাত্র ৫ কোটি ডলারের কম রপ্তানি করেছে ভিয়েতনাম। চীন ও ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণ যথাক্রমে ২১ ও ১৯ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনামের রপ্তানি যখন বাড়ছে, তখন বাংলাদেশের কমছে। চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে বাংলাদেশ ১৭৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে দেশটিতে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭.৬৮ শতাংশ কম। গত বছর শেষে রপ্তানি কমার হার ছিল ২৫ শতাংশ। তার মানে বড় এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে।
পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরেকটি দুশ্চিন্তা আছে। বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশ নিয়ে তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন (ইউএসআইটিসি)। কীভাবে দেশগুলো মার্কিন বাজারের এত বড় অংশ দখল করে রেখেছে, তা তথ্যানুসন্ধান করছে এই কমিশন। বাংলাদেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চতুর্থ ও পঞ্চম শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ যথাক্রমে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানিও কমেছে। এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ভারত ১২২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ কম। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে রপ্তানি করেছে ১০২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তাদের রপ্তানি কমেছে ১৪ শতাংশ।
পোশাক রপ্তানিকারকরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের চাহিদা কমেছে এবং খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো তাদের মজুত করা পণ্য বিক্রি করতে পারেনি। এ ছাড়া কার্যাদেশ কম এসেছে। ক্রেতারা স্থানীয় সরবরাহকারীদের পণ্যের দাম কম দিচ্ছেন। তারা বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও উচ্চ ব্যাংক সুদের হারের কারণে বিক্রি কমছে। ক্রেতারা এখনো অপ্রয়োজনীয় পণ্যের তুলনায় মৌলিক পণ্যগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তবে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও যুক্তরাজ্যের মতো নতুন বাজারের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশে বাংলাদেশ ভালো করছে।