বোয়িং নয়, ১০টি এয়ারবাস কেনার পরিকল্পনা করছে বিমান

নাগরিক প্রতিবেদন
০৮ মে, ২০২৪, 4:54 PM

বোয়িং নয়, ১০টি এয়ারবাস কেনার পরিকল্পনা করছে বিমান
১০টি উড়োজাহাজ কিনবে দেশের জাতীয় পতাকাবাহী আকাশ পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এরই মধ্যে পৃথকভাবে বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাতা এয়ারবাস ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং। কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাবও দিয়েছে কোম্পানি দুটি। এর মধ্যে এয়ারবাসের কাছ থেকেই উড়োজাহাজগুলো কেনার পরিকল্পনা করছে বিমান। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান গতকাল এ নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের পরিকল্পনা ১০টা এয়ারবাস কেনার।’
বিমানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী এয়ারবাসের ‘এ৩৫০’ ওয়াইড বডি মডেলের আটটি উড়োজাহাজ কেনা হবে। এর বাইরে কেনা হবে দুটি কার্গো উড়োজাহাজ। বিমানকে উড়োজাহাজ কেনার জন্য প্রয়োজনীয় ঋণও জোগাড় করে দেবে এয়ারবাস। এয়ারবাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বলছে, স্বল্প ও দীর্ঘ দূরত্ব (৯ হাজার ৭০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত) দুই ধরনের গন্তব্যেই এ৩৫০ মডেলের উড়োজাহাজগুলো দক্ষতার সঙ্গে চলাচল করতে পারে। এসব উড়োজাহাজে ৩০০ থেকে ৪৮০ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব। ধরনভেদে এয়ারবাসের এ৩৫০ মডেলের উড়োজাহাজগুলোর দাম ৩০৮-৩৫৬ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হয়।
সচিবালয়ে গতকাল যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যানি ম্যারি ট্রেভেলেইনের সঙ্গে এক বৈঠক করেন বিমানমন্ত্রী। উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের অন্যতম অংশীদার যুক্তরাজ্য। ম্যারি ট্রেভেলেইনের সঙ্গে এয়ারবাস কেনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে মন্তব্য করে বৈঠক-পরবর্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে বিমানমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ‘ইউরোপে উড়োজাহাজ বানায় এয়ারবাস। বাংলাদেশে আমাদের বোয়িং আছে। আমরা এখন এয়ারবাসকে বিবেচনা করছি। একই ধরনের উড়োজাহাজ না কিনে দুই ধরনের হলে আমাদের সুবিধা হতে পারে। সেটার জন্য আলোচনা চলছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এয়ারবাসে এরই মধ্যে তাদের আর্থিক প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাব ভালোভাবে মূল্যায়ন করে তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এবারই ওনারা চাচ্ছিল একটা এমওইউ স্বাক্ষর হোক। আমরা বলেছি এমওইউ এখন স্বাক্ষর করতে পারব না। কারণ এখনো মূল্যায়ন শেষ হয়নি। মূল্যায়নের পর এমওইউ স্বাক্ষর হবে।’ মূল্যায়ন কার্যক্রম কবে নাগাদ শেষ হতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ইভালুয়েশন টিম এক-দেড় মাসের মধ্যে এটা দেয়ার চেষ্টা করবে। কারণ জাতীয় বাজেটের আগেই এটা করার চেষ্টা তাদের মধ্যে রয়েছে।’ ফারুক খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি যতটুকু জানি, এয়ারবাসের কাছ থেকে বেশ ভালো প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। একই সময়ে বোয়িংও আমাদের ভালো প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাবগুলো আমরা মূল্যায়ন করছি। যেটা বাংলাদেশের স্বার্থে সবচেয়ে ভালো হবে সেটা আমরা বিবেচনা করব।’
ভালো প্রস্তাব বলতে কী বোঝাচ্ছেন এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘উড়োজাহাজগুলোর দাম, ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেয়া হবে তার সুদ, সেই সঙ্গে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোয় বেশ ভালো প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।’ বাংলাদেশ ১০টির মতো এয়ারবাস কিনতে চায় বলেও জানান বিমানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এগুলো কিনতে কত টাকা লাগতে পারে, তা নির্ভর করবে কীভাবে প্রস্তাব আসে তার ওপর।’ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে সংস্থাটির বহরে থাকা উড়োজাহাজের সংখ্যা ২১। এর মধ্যে ১৬টি বোয়িং কোম্পানির। বোয়িংয়ের উড়োজাহাজগুলোর মধ্যে ছয়টি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার।
সম্প্রতি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের কারিগরি ত্রুটির বিষয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে যদি এসব উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডেড করে দেয়া হয়, তাহলে বিমানের কাছে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা আছে কিনা এমন প্রশ্নে বিমানমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ‘বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের বিষয়ে পত্রিকায় বিভিন্ন কথা এসেছে। আমরা এ মুহূর্তে বিষয়টিকে এত বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি না। তবে বোয়িংয়ের সঙ্গে কথা বলে কারিগরি বিষয়গুলো জানতে বলেছি। এ মুহূর্তে আমরা কোনো সমস্যা পাইনি। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। একজন বা দুজনের কথার ওপর ভিত্তি করে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তবে এ বিষয়ে আমরা সতর্ক ও জানার চেষ্টা করছি।’ ছয়টি ড্রিমলাইনার ছাড়াও বিমানের বহরে বোয়িংয়ের চারটি ৭৭৭ ও ছয়টি ৭৩৭ মডেলের উড়োজাহাজ রয়েছে। সংস্থাটির বহরে থাকা বাকি পাঁচটি উড়োজাহাজ কানাডার উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ডের তৈরি ড্যাশ-৮।
নাগরিক প্রতিবেদন
০৮ মে, ২০২৪, 4:54 PM

১০টি উড়োজাহাজ কিনবে দেশের জাতীয় পতাকাবাহী আকাশ পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এরই মধ্যে পৃথকভাবে বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাতা এয়ারবাস ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং। কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাবও দিয়েছে কোম্পানি দুটি। এর মধ্যে এয়ারবাসের কাছ থেকেই উড়োজাহাজগুলো কেনার পরিকল্পনা করছে বিমান। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান গতকাল এ নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের পরিকল্পনা ১০টা এয়ারবাস কেনার।’
বিমানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী এয়ারবাসের ‘এ৩৫০’ ওয়াইড বডি মডেলের আটটি উড়োজাহাজ কেনা হবে। এর বাইরে কেনা হবে দুটি কার্গো উড়োজাহাজ। বিমানকে উড়োজাহাজ কেনার জন্য প্রয়োজনীয় ঋণও জোগাড় করে দেবে এয়ারবাস। এয়ারবাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বলছে, স্বল্প ও দীর্ঘ দূরত্ব (৯ হাজার ৭০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত) দুই ধরনের গন্তব্যেই এ৩৫০ মডেলের উড়োজাহাজগুলো দক্ষতার সঙ্গে চলাচল করতে পারে। এসব উড়োজাহাজে ৩০০ থেকে ৪৮০ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব। ধরনভেদে এয়ারবাসের এ৩৫০ মডেলের উড়োজাহাজগুলোর দাম ৩০৮-৩৫৬ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হয়।
সচিবালয়ে গতকাল যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যানি ম্যারি ট্রেভেলেইনের সঙ্গে এক বৈঠক করেন বিমানমন্ত্রী। উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাসের অন্যতম অংশীদার যুক্তরাজ্য। ম্যারি ট্রেভেলেইনের সঙ্গে এয়ারবাস কেনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে মন্তব্য করে বৈঠক-পরবর্তী প্রেস ব্রিফিংয়ে বিমানমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ‘ইউরোপে উড়োজাহাজ বানায় এয়ারবাস। বাংলাদেশে আমাদের বোয়িং আছে। আমরা এখন এয়ারবাসকে বিবেচনা করছি। একই ধরনের উড়োজাহাজ না কিনে দুই ধরনের হলে আমাদের সুবিধা হতে পারে। সেটার জন্য আলোচনা চলছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এয়ারবাসে এরই মধ্যে তাদের আর্থিক প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাব ভালোভাবে মূল্যায়ন করে তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এবারই ওনারা চাচ্ছিল একটা এমওইউ স্বাক্ষর হোক। আমরা বলেছি এমওইউ এখন স্বাক্ষর করতে পারব না। কারণ এখনো মূল্যায়ন শেষ হয়নি। মূল্যায়নের পর এমওইউ স্বাক্ষর হবে।’ মূল্যায়ন কার্যক্রম কবে নাগাদ শেষ হতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ইভালুয়েশন টিম এক-দেড় মাসের মধ্যে এটা দেয়ার চেষ্টা করবে। কারণ জাতীয় বাজেটের আগেই এটা করার চেষ্টা তাদের মধ্যে রয়েছে।’ ফারুক খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি যতটুকু জানি, এয়ারবাসের কাছ থেকে বেশ ভালো প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। একই সময়ে বোয়িংও আমাদের ভালো প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাবগুলো আমরা মূল্যায়ন করছি। যেটা বাংলাদেশের স্বার্থে সবচেয়ে ভালো হবে সেটা আমরা বিবেচনা করব।’
ভালো প্রস্তাব বলতে কী বোঝাচ্ছেন এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘উড়োজাহাজগুলোর দাম, ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেয়া হবে তার সুদ, সেই সঙ্গে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোয় বেশ ভালো প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।’ বাংলাদেশ ১০টির মতো এয়ারবাস কিনতে চায় বলেও জানান বিমানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এগুলো কিনতে কত টাকা লাগতে পারে, তা নির্ভর করবে কীভাবে প্রস্তাব আসে তার ওপর।’ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে সংস্থাটির বহরে থাকা উড়োজাহাজের সংখ্যা ২১। এর মধ্যে ১৬টি বোয়িং কোম্পানির। বোয়িংয়ের উড়োজাহাজগুলোর মধ্যে ছয়টি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার।
সম্প্রতি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের কারিগরি ত্রুটির বিষয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে যদি এসব উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডেড করে দেয়া হয়, তাহলে বিমানের কাছে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা আছে কিনা এমন প্রশ্নে বিমানমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ‘বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের বিষয়ে পত্রিকায় বিভিন্ন কথা এসেছে। আমরা এ মুহূর্তে বিষয়টিকে এত বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি না। তবে বোয়িংয়ের সঙ্গে কথা বলে কারিগরি বিষয়গুলো জানতে বলেছি। এ মুহূর্তে আমরা কোনো সমস্যা পাইনি। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। একজন বা দুজনের কথার ওপর ভিত্তি করে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তবে এ বিষয়ে আমরা সতর্ক ও জানার চেষ্টা করছি।’ ছয়টি ড্রিমলাইনার ছাড়াও বিমানের বহরে বোয়িংয়ের চারটি ৭৭৭ ও ছয়টি ৭৩৭ মডেলের উড়োজাহাজ রয়েছে। সংস্থাটির বহরে থাকা বাকি পাঁচটি উড়োজাহাজ কানাডার উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ডের তৈরি ড্যাশ-৮।