চুয়েট ফটকে তালা শিক্ষার্থীদের, হল ত্যাগে অস্বীকৃতি

নাগরিক প্রতিবেদক , চট্টগ্রাম
২৬ এপ্রিল, ২০২৪, 6:08 PM

চুয়েট ফটকে তালা শিক্ষার্থীদের, হল ত্যাগে অস্বীকৃতি
বাসের ধাক্কায় দুই ছাত্র নিহতের জের ধরে টানা আন্দোলনের মুখে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে এই নোটিশ পাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাম্পাসে আটকে রাখা শাহ আমানত কোম্পানির দুটি বাস পুড়িয়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পাশাপাশি বিকাল ৫টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগে অস্বীকৃতি জানিয়ে ক্যাম্পাসেই অবস্থান করেন। গত সোমবার বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস পোড়ান। এর পর থেকে তারা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়ক টানা বন্ধ রেখে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হয়। চুয়েট বন্ধ ঘোষণার পর দুটি বাসে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে প্রবেশের দুটি ফটকের নিয়ন্ত্রণ নেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, ক্যাম্পাসে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যাতে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য এ ব্যবস্থা। মূল ফটকে শিক্ষার্থীরা বসে যাওয়ায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারেননি। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পরিস্থিতি প্রসঙ্গে চুয়েট প্রাক্তন ছাত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ফিরোজ খান নুন ফরাজি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনা আয়োজন করার মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে সমাধানের চেষ্টা করছি। গত সোমবার বিকালে চুয়েটের পার্শ্ববর্তী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগরে দ্রুতগতির শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় নিহত হন মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তওফিক হোসেন। এ ঘটনায় ওই দিন চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধের পাশাপাশি ওই পরিবহনের দুটি বাস আটক এবং একটি বাসে আগুন দেন শিক্ষার্থীরা। সেই থেকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছেন তারা। টানা সড়ক অবরোধের কারণে উত্তর চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কের দুই পাশে পণ্যবাহী শত শত গাড়ি আটকা পড়েছে।
গতকাল দুপুরে চুয়েট প্রশাসন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনার জন্য ডাকে। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে তারা প্রেস ব্রিফিং করে। এতে তারা আন্দোলনকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং স্থানীয় জনগণকে এই আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানান। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে পাশে থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ককে প্রশস্ত করে চার লেন করার দাবি জানানো হয়। এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেন তারা। দুপুরে উপাচার্য কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের একাধিকবার আলোচনায় ডাকা হলেও তারা আসেনি। বিকাল ৪টায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তখন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। তবে প্রশাসন পরে সেই তালা ভেঙে ফেলে।
নাগরিক প্রতিবেদক , চট্টগ্রাম
২৬ এপ্রিল, ২০২৪, 6:08 PM

বাসের ধাক্কায় দুই ছাত্র নিহতের জের ধরে টানা আন্দোলনের মুখে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে এই নোটিশ পাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাম্পাসে আটকে রাখা শাহ আমানত কোম্পানির দুটি বাস পুড়িয়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পাশাপাশি বিকাল ৫টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগে অস্বীকৃতি জানিয়ে ক্যাম্পাসেই অবস্থান করেন। গত সোমবার বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস পোড়ান। এর পর থেকে তারা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়ক টানা বন্ধ রেখে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হয়। চুয়েট বন্ধ ঘোষণার পর দুটি বাসে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে প্রবেশের দুটি ফটকের নিয়ন্ত্রণ নেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, ক্যাম্পাসে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যাতে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য এ ব্যবস্থা। মূল ফটকে শিক্ষার্থীরা বসে যাওয়ায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারেননি। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পরিস্থিতি প্রসঙ্গে চুয়েট প্রাক্তন ছাত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ফিরোজ খান নুন ফরাজি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনা আয়োজন করার মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে সমাধানের চেষ্টা করছি। গত সোমবার বিকালে চুয়েটের পার্শ্ববর্তী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগরে দ্রুতগতির শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় নিহত হন মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তওফিক হোসেন। এ ঘটনায় ওই দিন চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধের পাশাপাশি ওই পরিবহনের দুটি বাস আটক এবং একটি বাসে আগুন দেন শিক্ষার্থীরা। সেই থেকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছেন তারা। টানা সড়ক অবরোধের কারণে উত্তর চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কের দুই পাশে পণ্যবাহী শত শত গাড়ি আটকা পড়েছে।
গতকাল দুপুরে চুয়েট প্রশাসন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনার জন্য ডাকে। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে তারা প্রেস ব্রিফিং করে। এতে তারা আন্দোলনকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং স্থানীয় জনগণকে এই আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানান। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে পাশে থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ককে প্রশস্ত করে চার লেন করার দাবি জানানো হয়। এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেন তারা। দুপুরে উপাচার্য কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের একাধিকবার আলোচনায় ডাকা হলেও তারা আসেনি। বিকাল ৪টায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তখন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। তবে প্রশাসন পরে সেই তালা ভেঙে ফেলে।