ঢাকায় পোষা প্রাণীর র‌্যাম্প শো

#
news image

র‌্যাম্প শো- সাধারণত মডেল, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়েই হয়ে থাকে। এবার পশুদের নিয়ে র‌্যাম্প শোর আয়োজন করা হয়েছে। এই শোতে প্রদর্শন করা হয়েছে উট, ঘোড়া, কুকুর, দেশি-বিদেশি জাতের গরু, মুরগি ও পাখিসহ পোষা প্রাণীদের। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের পুরাতন বাণিজ্যমেলার মাঠে এই শোর আয়োজন করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আয়োজিত প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিন গতকাল অনুষ্ঠিত হয় ভিন্ন ধর্মী এই শো। বিকাল ৪টায় শো শুরুর কথা থাকলেও অত্যধিক গরমের

কারণে রোদ কমার পর তা শুরু হয়। মাঠের এক পাশে দর্শকদের জন্য দুটি গ্যালারি করা হয়। মাঝে বালুর মাঠে কাঠের রেলিং দিয়ে সার্কেল তৈরি করা হয়। অন্য দুই পাশে সবার দেখার সুবিধার্থে বড় স্ক্রিন বসানো হয়। র‌্যাম্প শো শুরুর আগেই গ্যালারি দুটি ছিল দর্শকে পূর্ণ। অনেকেই পরিবার নিয়ে হাজির হন। বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে।

বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শোর শুরুতে আসে রাজস্থানি উট। সাদেক অ্যাগ্রো এই উট প্রদর্শন করে। এর পরে আসে কুকুর। পেটম্যানবিডির পক্ষ থেকে র‌্যাম্পে আনা সাইবেরিয়ান জাতের চার বছর বয়সী নারী কুকুরটি খানিকটা প্রশিক্ষিত। এরপর আমেরিকান জাতের বড় একটি মোরগ মাঠে ছেড়ে দেওয়া হয়, যার ওজন প্রায় ৬ কেজি। এ ছাড়া মাড়োয়ারি, রাজস্থান জাতের কয়েকটি ঘোড়া নিয়ে হাজির হন সানজু হর্স। এগুলো রেসের জন্য বিক্রি করা হয়। কেরানীগঞ্জের আস্তাবলও ঘোড়া প্রদর্শন করেন। প্রতিটি ঘোড়ার দাম সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা।

র‌্যাম্প শোতে কাঁধে মুরগি নিয়ে হাজির হন বগুড়ার সাজ্জাদুল ইসলাম আপন। বগুড়ার এই উদ্যোক্তা মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়ে এক জোড়া সিল্কি মুরগি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এখন তার খামারে ২৮ জাতের মুরগি রয়েছে। তিনি এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ টাকার মুরগি বিক্রি করেছেন বলে জানা গেছে। তরুণ এই উদ্যোক্তা ২৫ হাজার টাকা দামের ব্রাহামা জাতের ১ জোড়া মুরগি প্রদর্শন করেন। শোর মধ্যেই সেখান থেকে ১৫ হাজার টাকায় একটি মুরগি বিক্রি হয়।

র‌্যাম্প শোর মূল আকর্ষণ ছিল বেলজিয়াম ব্লু। বিশালদেহী এই গরু শোতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই দর্শকরা করতালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। দুই ব্যক্তি চেষ্টা করেও গরুটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। মাঠে কিছু সময় এদিক-ওদিক ঘুরে নিজের মতো করে সে দৌড় দেয়। এরপর ১ হাজার ৮০ কেজি ওজনের ২০ মাস বয়সী একটি ষাঁড় প্রদর্শন করা হয়; যার মূল্য হাঁকানো হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া গির জাতের ৯শ কেজি ওজনের একটি গরু আনা হয়। খামারির প্রত্যাশিত মূল্য ২০ লাখ টাকা।

চুয়াডাঙ্গার স্বপ্ন সাজ ফার্মের পক্ষ থেকে শাহীওয়াল, ব্রাহামা জাতের ১১শ কেজি, ৯শ কেজি ওজনের গরু দেখানো হয়। চট্টগ্রামের নাহার ডেইরির পক্ষ থেকে হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান ও রেড চিটাগং জাতের গরু প্রদর্শন করা হয়। আইকনিক বাংলা ক্যানেল অ্যান্ড অ্যাগ্রোর পক্ষ থেকে প্রশিক্ষিত ১০টি কুকুর প্রদর্শন করা হয়।

বগুড়া ভাণ্ডার অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী ও অন্যতম আয়োজক তাওহীদ পারভেজ বিপ্লব জানান, দুই দিনের র‌্যাম্প শোতে দুই শতাধিক গরুসহ নানা ধরনের প্রাণী প্রদর্শন করা হবে। এখানে জাজ প্যানেল আছেন। ক্যাটাগরি অনুযায়ী শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হবে।

ছেলেকে নিয়ে মেলায় আসা মিরপুরের আবদুল আউয়াল জানান, অনেক পোষা প্রাণী বাচ্চারা বইতে দেখে। আজ সরাসরি দেখাতে নিয়ে এলাম। দেখে আনন্দ পেয়েছে।

প্রদর্শনীর মাঠে স্টল দিয়েও বিভিন্ন প্রাণী প্রদর্শন করা হচ্ছে। আজ রাতে প্রদর্শনী শেষ হবে।

নাগরিক প্রতিবেদন

১৯ এপ্রিল, ২০২৪,  6:23 PM

news image

র‌্যাম্প শো- সাধারণত মডেল, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়েই হয়ে থাকে। এবার পশুদের নিয়ে র‌্যাম্প শোর আয়োজন করা হয়েছে। এই শোতে প্রদর্শন করা হয়েছে উট, ঘোড়া, কুকুর, দেশি-বিদেশি জাতের গরু, মুরগি ও পাখিসহ পোষা প্রাণীদের। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের পুরাতন বাণিজ্যমেলার মাঠে এই শোর আয়োজন করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আয়োজিত প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিন গতকাল অনুষ্ঠিত হয় ভিন্ন ধর্মী এই শো। বিকাল ৪টায় শো শুরুর কথা থাকলেও অত্যধিক গরমের

কারণে রোদ কমার পর তা শুরু হয়। মাঠের এক পাশে দর্শকদের জন্য দুটি গ্যালারি করা হয়। মাঝে বালুর মাঠে কাঠের রেলিং দিয়ে সার্কেল তৈরি করা হয়। অন্য দুই পাশে সবার দেখার সুবিধার্থে বড় স্ক্রিন বসানো হয়। র‌্যাম্প শো শুরুর আগেই গ্যালারি দুটি ছিল দর্শকে পূর্ণ। অনেকেই পরিবার নিয়ে হাজির হন। বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে।

বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শোর শুরুতে আসে রাজস্থানি উট। সাদেক অ্যাগ্রো এই উট প্রদর্শন করে। এর পরে আসে কুকুর। পেটম্যানবিডির পক্ষ থেকে র‌্যাম্পে আনা সাইবেরিয়ান জাতের চার বছর বয়সী নারী কুকুরটি খানিকটা প্রশিক্ষিত। এরপর আমেরিকান জাতের বড় একটি মোরগ মাঠে ছেড়ে দেওয়া হয়, যার ওজন প্রায় ৬ কেজি। এ ছাড়া মাড়োয়ারি, রাজস্থান জাতের কয়েকটি ঘোড়া নিয়ে হাজির হন সানজু হর্স। এগুলো রেসের জন্য বিক্রি করা হয়। কেরানীগঞ্জের আস্তাবলও ঘোড়া প্রদর্শন করেন। প্রতিটি ঘোড়ার দাম সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা।

র‌্যাম্প শোতে কাঁধে মুরগি নিয়ে হাজির হন বগুড়ার সাজ্জাদুল ইসলাম আপন। বগুড়ার এই উদ্যোক্তা মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়ে এক জোড়া সিল্কি মুরগি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এখন তার খামারে ২৮ জাতের মুরগি রয়েছে। তিনি এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ টাকার মুরগি বিক্রি করেছেন বলে জানা গেছে। তরুণ এই উদ্যোক্তা ২৫ হাজার টাকা দামের ব্রাহামা জাতের ১ জোড়া মুরগি প্রদর্শন করেন। শোর মধ্যেই সেখান থেকে ১৫ হাজার টাকায় একটি মুরগি বিক্রি হয়।

র‌্যাম্প শোর মূল আকর্ষণ ছিল বেলজিয়াম ব্লু। বিশালদেহী এই গরু শোতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই দর্শকরা করতালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। দুই ব্যক্তি চেষ্টা করেও গরুটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। মাঠে কিছু সময় এদিক-ওদিক ঘুরে নিজের মতো করে সে দৌড় দেয়। এরপর ১ হাজার ৮০ কেজি ওজনের ২০ মাস বয়সী একটি ষাঁড় প্রদর্শন করা হয়; যার মূল্য হাঁকানো হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া গির জাতের ৯শ কেজি ওজনের একটি গরু আনা হয়। খামারির প্রত্যাশিত মূল্য ২০ লাখ টাকা।

চুয়াডাঙ্গার স্বপ্ন সাজ ফার্মের পক্ষ থেকে শাহীওয়াল, ব্রাহামা জাতের ১১শ কেজি, ৯শ কেজি ওজনের গরু দেখানো হয়। চট্টগ্রামের নাহার ডেইরির পক্ষ থেকে হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান ও রেড চিটাগং জাতের গরু প্রদর্শন করা হয়। আইকনিক বাংলা ক্যানেল অ্যান্ড অ্যাগ্রোর পক্ষ থেকে প্রশিক্ষিত ১০টি কুকুর প্রদর্শন করা হয়।

বগুড়া ভাণ্ডার অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী ও অন্যতম আয়োজক তাওহীদ পারভেজ বিপ্লব জানান, দুই দিনের র‌্যাম্প শোতে দুই শতাধিক গরুসহ নানা ধরনের প্রাণী প্রদর্শন করা হবে। এখানে জাজ প্যানেল আছেন। ক্যাটাগরি অনুযায়ী শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হবে।

ছেলেকে নিয়ে মেলায় আসা মিরপুরের আবদুল আউয়াল জানান, অনেক পোষা প্রাণী বাচ্চারা বইতে দেখে। আজ সরাসরি দেখাতে নিয়ে এলাম। দেখে আনন্দ পেয়েছে।

প্রদর্শনীর মাঠে স্টল দিয়েও বিভিন্ন প্রাণী প্রদর্শন করা হচ্ছে। আজ রাতে প্রদর্শনী শেষ হবে।