সোমালিয়া উপকূলে জিম্মি বাংলাদেশী জাহাজ

নাগরিক প্রতিবেদন
১৫ মার্চ, ২০২৪, 2:18 PM

সোমালিয়া উপকূলে জিম্মি বাংলাদেশী জাহাজ
জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশী জাহাজটিকে গতকাল সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে গেছে জলদস্যুরা। লন্ডন ও কুয়ালালামপুরভিত্তিক জলদস্যুতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরো (আইএমবি) থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জাহাজটির এ অবস্থান নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। তবে দস্যুরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এদিকে, নাবিকদের উদ্ধারে করণীয় ঠিক করতে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘জলস্যুদের দখলে থাকা জাহাজটি সোমালিয়ার কাছাকাছি নোঙর করা আছে। জিম্মিদেরসহ জাহাজটি গ্যারাকাদ থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে।’
জাহাজটির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘ইফতারের আগ মুহূর্তে জাহাজের চিফ অফিসার মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ খানের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। সব নাবিক সুস্থ আছেন। জিম্মি করার পর সবাইকে এক কেবিনে রাখা হলেও বৃহস্পতিবার বিকালে যার যার কেবিনে যেতে দেয়া হয় নাবিকদের। এখন পর্যন্ত জলদস্যুদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফোন পাইনি। বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ একটি ইউরোপীয় জাহাজ থেকে আবদুল্লাহর ওপর নজর রাখার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স—ইইউএনএভিএফওআর। তাদের কার্যক্রম অপারেশন আটলান্টা হিসেবে পরিচিত। ইউরোপীয় নৌ-নিরাপত্তা বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অপারেশন আটলান্টার অংশ হিসেবে তারা সোমালিয়া উপকূলে একটি জাহাজ মোতায়েন করেছে। জাহাজটি বাংলাদেশী কার্গো জাহাজ আবদুল্লাহকে অনুসরণ করছে।
এদিকে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশী নাবিকদের উদ্ধারে করণীয় বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম।
তিনি বলেন, ‘সমবেদনা জানাচ্ছি ২৩ জন নাবিকের পরিবার-পরিজনের প্রতি। সোমালিয়ার এ অঞ্চলে ২০০১ সাল থেকে অর্থাৎ ২৪ বছর ধরে পাইরেসি হচ্ছে। আইনগতভাবে উপকূল থেকে ২০০ মাইল দূরে হলে সেটিকে পাইরেসি বলা হয়। আমাদের জাহাজ ৫৭৫ মাইল দূর দিয়ে যাচ্ছিল। ইন্ডিয়ান ওশানে কতগুলো জায়গা ভাগ করা আছে। কোনোটা হাইরিস্ক, কোনোটা লো রিস্ক। আমাদের এ জাহাজ কিন্তু হাইরিস্ক এলাকার বাইরে ছিল। কিন্তু তার পরও তারা হয়তো ওঁৎ পেতে ছিল। জাহাজটিতে সম্ভবত ৬৭ জন লোক আছে। আমাদের ২৩ জন ছিল। আটকের পর জাহাজটি নিয়ে তারা সোমালিয়ার দিকে রওনা হয়, আজ ভোরের দিকে সোমালিয়ায় তারা নোঙর করেছে।’
খোরশেদ আলম বলেন, ‘জলদস্যুদের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ হয়নি। তারাও এখনো আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। আমরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। সেখানে আশপাশের জাহাজগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। এ ধরনের ঘটনা আমাদের সঙ্গে আগেও ঘটেছে। আমাদের এ অভিজ্ঞতা আছে। ২০১০ সালে জাহানমনি নামে একটি জাহাজ ধরে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা সেটি ১০০ দিন পর উদ্ধার করতে পেরেছি। এরপর মালয়েশিয়ান একতা জাহাজ, আলবেদো তারা ধরে নিয়ে গেছে। সেখানে আমাদের নাবিক ছিল সাতজন, ইরানিয়ান দুজন, ভারতীয় তিনজন, পাকিস্তানি দুজন ও শ্রীলংকন পাঁচজন। তখন মালয়েশিয়ান মালিক পক্ষ বলল, এ জাহাজের কোনো দায়দায়িত্ব আমার ওপর নেই। তখন জাহাজটি সেখানে আটকা থাকে। আমরা এখান থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। প্রায় আড়াই বছর পর জাহাজটা সেখানে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার সময় কিছু লোক মারা যায়। আমাদের কোনো লোক মারা যায়নি। আমাদের লোকদের নিয়ে তারা সরিয়ে রাখে। ৩ বছর ৪ মাস পর কেনিয়ার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে আমরা তাদের ফেরত নিয়ে আসি।’
বাংলাদেশের প্রচেষ্টার বিষয় তুলে ধরে এ সচিব বলেন, ‘এ জাহাজের বিষয়ে আমি শুধু এতটুকু বলব, আমরা চেষ্টায় আছি। আমাদের শিপিং মিনিস্ট্রি, জাহাজের মালিক পক্ষসহ সব পক্ষের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। আমরা এখনো জানি না তাদের কী দাবিদাওয়া, যদি জানতে পারি, তখন আমরা হয়তো কৌশলগত কারণে সাংবাদিকদের সবকিছু জানাতে পারব না। আপনারা একটু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করবেন। গণমাধ্যমে যেসব খবর দেয়া হচ্ছে, তাতে অন্যায় কিছু দেখি না। কিন্তু তারা আমাদের এখানকার খবর দেখবে, তখন তারা বুঝবে সরকারের ওপর একটা চাপ আছে। এমন পরিস্থিতিতে তারা আরো বেশি সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে। যারা মধ্যস্থতা করবে, তারা যেন প্রকাশিত সংবাদের কারণে কোনো রকম চাপে না পড়ে। যেভাবে জাহানমনি, আলবেদোকে আনা হয়েছে, সেভাবে আমরা এটিকেও ফেরত আনতে সক্ষম হব। সে প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আমরা আশা করি ২৩ জন নাবিক এবং মালপত্র সবই আমরা অক্ষত অবস্থায় ফেরত আনতে পারব। তবে সেটা কবে? জাহানমনি ফেরত আনতে ১০০ দিন লেগেছে। কাজেই সময় একটা ব্যাপার।’
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অতীত অভিজ্ঞতা যা বলে, তাদের দরকার টাকা। ফলে ক্রুদের ওপর অত্যাচার করলে তো লাভ নেই তাদের। এর আগেও ৩ বছর ৪ মাস একটা জাহাজ আটকে ছিল। তাদের তো বাঁচিয়ে রেখেছে, মেরে ফেললেও পারত। কিন্তু সেটি তারা করেনি। কাজেই এসব নিয়ে চিন্তা করার কারণ নেই। এখানে গত ২৪ বছরে ৪০০-৫০০ জাহাজ আটক হয়েছে। অনেক উন্নত দেশের জাহাজও আটক হয়েছে। সবাই যে পথে শান্তিপূর্ণভাবে ছাড়িয়ে আনছে, আমরা সেভাবে চেষ্টা করছি। তারা কোনো মুক্তিপণ চায়নি, যোগাযোগও করেনি। প্রোটেকশন অ্যান্ড ইনডেমনিটি ক্লাবে এ জাহাজের বীমা করা আছে। আমরা তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। সোমালিয়ার পাইরেসি রিপোর্টিং সেন্টারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি।’
উল্লেখ্য, মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন। সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে জাহাজ পরিচালনা ব্যবসায় নেতৃত্ব দিচ্ছে গ্রুপটি। ১৯ মার্চ দুবাইয়ে পৌঁছার কথা ছিল জাহাজটির। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজটিতে থাকা ২৩ জন নাবিকের সবাই বাংলাদেশী।
নাগরিক প্রতিবেদন
১৫ মার্চ, ২০২৪, 2:18 PM

জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশী জাহাজটিকে গতকাল সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে গেছে জলদস্যুরা। লন্ডন ও কুয়ালালামপুরভিত্তিক জলদস্যুতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরো (আইএমবি) থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জাহাজটির এ অবস্থান নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। তবে দস্যুরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এদিকে, নাবিকদের উদ্ধারে করণীয় ঠিক করতে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘জলস্যুদের দখলে থাকা জাহাজটি সোমালিয়ার কাছাকাছি নোঙর করা আছে। জিম্মিদেরসহ জাহাজটি গ্যারাকাদ থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে।’
জাহাজটির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘ইফতারের আগ মুহূর্তে জাহাজের চিফ অফিসার মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ খানের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। সব নাবিক সুস্থ আছেন। জিম্মি করার পর সবাইকে এক কেবিনে রাখা হলেও বৃহস্পতিবার বিকালে যার যার কেবিনে যেতে দেয়া হয় নাবিকদের। এখন পর্যন্ত জলদস্যুদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফোন পাইনি। বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ একটি ইউরোপীয় জাহাজ থেকে আবদুল্লাহর ওপর নজর রাখার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স—ইইউএনএভিএফওআর। তাদের কার্যক্রম অপারেশন আটলান্টা হিসেবে পরিচিত। ইউরোপীয় নৌ-নিরাপত্তা বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অপারেশন আটলান্টার অংশ হিসেবে তারা সোমালিয়া উপকূলে একটি জাহাজ মোতায়েন করেছে। জাহাজটি বাংলাদেশী কার্গো জাহাজ আবদুল্লাহকে অনুসরণ করছে।
এদিকে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশী নাবিকদের উদ্ধারে করণীয় বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম।
তিনি বলেন, ‘সমবেদনা জানাচ্ছি ২৩ জন নাবিকের পরিবার-পরিজনের প্রতি। সোমালিয়ার এ অঞ্চলে ২০০১ সাল থেকে অর্থাৎ ২৪ বছর ধরে পাইরেসি হচ্ছে। আইনগতভাবে উপকূল থেকে ২০০ মাইল দূরে হলে সেটিকে পাইরেসি বলা হয়। আমাদের জাহাজ ৫৭৫ মাইল দূর দিয়ে যাচ্ছিল। ইন্ডিয়ান ওশানে কতগুলো জায়গা ভাগ করা আছে। কোনোটা হাইরিস্ক, কোনোটা লো রিস্ক। আমাদের এ জাহাজ কিন্তু হাইরিস্ক এলাকার বাইরে ছিল। কিন্তু তার পরও তারা হয়তো ওঁৎ পেতে ছিল। জাহাজটিতে সম্ভবত ৬৭ জন লোক আছে। আমাদের ২৩ জন ছিল। আটকের পর জাহাজটি নিয়ে তারা সোমালিয়ার দিকে রওনা হয়, আজ ভোরের দিকে সোমালিয়ায় তারা নোঙর করেছে।’
খোরশেদ আলম বলেন, ‘জলদস্যুদের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ হয়নি। তারাও এখনো আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। আমরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। সেখানে আশপাশের জাহাজগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। এ ধরনের ঘটনা আমাদের সঙ্গে আগেও ঘটেছে। আমাদের এ অভিজ্ঞতা আছে। ২০১০ সালে জাহানমনি নামে একটি জাহাজ ধরে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা সেটি ১০০ দিন পর উদ্ধার করতে পেরেছি। এরপর মালয়েশিয়ান একতা জাহাজ, আলবেদো তারা ধরে নিয়ে গেছে। সেখানে আমাদের নাবিক ছিল সাতজন, ইরানিয়ান দুজন, ভারতীয় তিনজন, পাকিস্তানি দুজন ও শ্রীলংকন পাঁচজন। তখন মালয়েশিয়ান মালিক পক্ষ বলল, এ জাহাজের কোনো দায়দায়িত্ব আমার ওপর নেই। তখন জাহাজটি সেখানে আটকা থাকে। আমরা এখান থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। প্রায় আড়াই বছর পর জাহাজটা সেখানে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার সময় কিছু লোক মারা যায়। আমাদের কোনো লোক মারা যায়নি। আমাদের লোকদের নিয়ে তারা সরিয়ে রাখে। ৩ বছর ৪ মাস পর কেনিয়ার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে আমরা তাদের ফেরত নিয়ে আসি।’
বাংলাদেশের প্রচেষ্টার বিষয় তুলে ধরে এ সচিব বলেন, ‘এ জাহাজের বিষয়ে আমি শুধু এতটুকু বলব, আমরা চেষ্টায় আছি। আমাদের শিপিং মিনিস্ট্রি, জাহাজের মালিক পক্ষসহ সব পক্ষের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। আমরা এখনো জানি না তাদের কী দাবিদাওয়া, যদি জানতে পারি, তখন আমরা হয়তো কৌশলগত কারণে সাংবাদিকদের সবকিছু জানাতে পারব না। আপনারা একটু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করবেন। গণমাধ্যমে যেসব খবর দেয়া হচ্ছে, তাতে অন্যায় কিছু দেখি না। কিন্তু তারা আমাদের এখানকার খবর দেখবে, তখন তারা বুঝবে সরকারের ওপর একটা চাপ আছে। এমন পরিস্থিতিতে তারা আরো বেশি সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে। যারা মধ্যস্থতা করবে, তারা যেন প্রকাশিত সংবাদের কারণে কোনো রকম চাপে না পড়ে। যেভাবে জাহানমনি, আলবেদোকে আনা হয়েছে, সেভাবে আমরা এটিকেও ফেরত আনতে সক্ষম হব। সে প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আমরা আশা করি ২৩ জন নাবিক এবং মালপত্র সবই আমরা অক্ষত অবস্থায় ফেরত আনতে পারব। তবে সেটা কবে? জাহানমনি ফেরত আনতে ১০০ দিন লেগেছে। কাজেই সময় একটা ব্যাপার।’
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অতীত অভিজ্ঞতা যা বলে, তাদের দরকার টাকা। ফলে ক্রুদের ওপর অত্যাচার করলে তো লাভ নেই তাদের। এর আগেও ৩ বছর ৪ মাস একটা জাহাজ আটকে ছিল। তাদের তো বাঁচিয়ে রেখেছে, মেরে ফেললেও পারত। কিন্তু সেটি তারা করেনি। কাজেই এসব নিয়ে চিন্তা করার কারণ নেই। এখানে গত ২৪ বছরে ৪০০-৫০০ জাহাজ আটক হয়েছে। অনেক উন্নত দেশের জাহাজও আটক হয়েছে। সবাই যে পথে শান্তিপূর্ণভাবে ছাড়িয়ে আনছে, আমরা সেভাবে চেষ্টা করছি। তারা কোনো মুক্তিপণ চায়নি, যোগাযোগও করেনি। প্রোটেকশন অ্যান্ড ইনডেমনিটি ক্লাবে এ জাহাজের বীমা করা আছে। আমরা তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। সোমালিয়ার পাইরেসি রিপোর্টিং সেন্টারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি।’
উল্লেখ্য, মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন। সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে জাহাজ পরিচালনা ব্যবসায় নেতৃত্ব দিচ্ছে গ্রুপটি। ১৯ মার্চ দুবাইয়ে পৌঁছার কথা ছিল জাহাজটির। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজটিতে থাকা ২৩ জন নাবিকের সবাই বাংলাদেশী।