বে-টার্মিনাল প্রকল্প - ৫০০ একর জমি পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর

#
news image

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আরও ৫০০ দশমিক ৭১ একর সরকারি খাসজমি পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। যদিও এ ভূমির জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন জমির মূল্য ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকা নির্ধারণ করলেও চবক সেই জমি পাচ্ছে মাত্র ৩ কোটি ৩ টাকায়। নামমাত্র মূল্যে এই জমি পাওয়ায় চবকের সাশ্রয় হবে প্রায় ১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা।

চবক সূত্রে জানা যায়, বন্দরের পণ্য হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নগরীর পতেঙ্গা-হালিশহর সমুদ্র উপকূলে প্রায় আড়াই হাজার একর ভূমিতে সরকারি-বেসরকারি পার্টনারশিপে বে-টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে ৭৯১ দশমিক ৭৮ একর ভূমি সমুদ্র উপকূল থেকে পাওয়া যাবে। বাকিটা সমুদ্র থেকে রিক্লেইম (পুনরুদ্ধার) করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০২১ সালে ৬৬ দশমিক ৮৫ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি বন্দরকে বুঝিয়ে দেয়। এ ভূমির অধিগ্রহণ মূল্য ছিল প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এরপর বন্দর বাকি প্রায় ৮০৩ একর সরকারি খাসজমি প্রতীকী মূল্যে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করে।

২০২১ সালের জুন মাসে ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়। গত ৩১ জানুয়ারি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বে-টার্মিনালের জন্য ৫০০ একর ৭১ শতক সরকারি খাসজমি ৩ কোটি ৩ টাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য চিঠি পাঠায়। এখন জেলা প্রশাসন থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষকে ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য চিঠি দেবে। এ টাকা ৯০ দিনের মধ্যে জমা করলে জেলা প্রশাসন ওই জমি বন্দরকে বুঝিয়ে  দেবে। এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে ৫০০ একর খাসজমির মূল্য পুনর্নির্ধারণ করে ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকা নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন। তবে ওই জমি প্রতীকী মূল্যে পেতে চবকের করা আবেদন ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় সেই জায়গা এবার নামমাত্র মূল্যে পাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটি বলছে, বে-টার্মিনাল নিয়ে দীর্ঘদিনের ভূমি জটিলতা নিরসন হচ্ছে। জমি পাওয়া গেলে বড় ধরনের অগ্রগতি হবে বে টার্মিনালের।

এদিকে ৮০৩ একর ভূমির মধ্যে কিছু জমি বন বিভাগের অধীনে ছিল বলে তাতে আপত্তি দেয় বন বিভাগ। আর কিছু জমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তিকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে দাবি ওঠে। জটিলতা কাটাতে জেলা প্রশাসন তিন শ্রেণির জমিকে আলাদা করে বন্দোবস্ত দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ৫০০ একর নিষ্কণ্টক খাসজমির জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। এই জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। বন বিভাগের ২৮৭ একর জমির জটিলতা নিরসন করতে পাঠানো হয় আরও একটি প্রস্তাব।

সাম্প্রতিক আলাপকালে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহেল বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বছরে যে পরিমাণ পণ্য হ্যান্ডলিং করতে পারে, শুধু বে-টার্মিনালেই হ্যান্ডলিং করা যাবে তার কয়েকগুণ বেশি। বে-টার্মিনাল প্রকল্পের আওতায় তিনটি টার্মিনাল নির্মিত হবে। এর মধ্যে একটি নির্মাণ ও পরিচালনা করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাকি দুটি টার্মিনাল পিপিপি ভিত্তিতে বিদেশি বিনিয়োগে নির্মাণ করা হবে। এরই মধ্যে দুটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক পোর্ট অব সিঙ্গাপুর অথরিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আলাপ-আলোচনা চলছে। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের আমরা কাজ শুরু করতে পারব।

নাগরিক প্রতিবেদন

০৮ মার্চ, ২০২৪,  9:40 AM

news image

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আরও ৫০০ দশমিক ৭১ একর সরকারি খাসজমি পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। যদিও এ ভূমির জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন জমির মূল্য ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকা নির্ধারণ করলেও চবক সেই জমি পাচ্ছে মাত্র ৩ কোটি ৩ টাকায়। নামমাত্র মূল্যে এই জমি পাওয়ায় চবকের সাশ্রয় হবে প্রায় ১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা।

চবক সূত্রে জানা যায়, বন্দরের পণ্য হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নগরীর পতেঙ্গা-হালিশহর সমুদ্র উপকূলে প্রায় আড়াই হাজার একর ভূমিতে সরকারি-বেসরকারি পার্টনারশিপে বে-টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে ৭৯১ দশমিক ৭৮ একর ভূমি সমুদ্র উপকূল থেকে পাওয়া যাবে। বাকিটা সমুদ্র থেকে রিক্লেইম (পুনরুদ্ধার) করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০২১ সালে ৬৬ দশমিক ৮৫ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি বন্দরকে বুঝিয়ে দেয়। এ ভূমির অধিগ্রহণ মূল্য ছিল প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এরপর বন্দর বাকি প্রায় ৮০৩ একর সরকারি খাসজমি প্রতীকী মূল্যে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করে।

২০২১ সালের জুন মাসে ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়। গত ৩১ জানুয়ারি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বে-টার্মিনালের জন্য ৫০০ একর ৭১ শতক সরকারি খাসজমি ৩ কোটি ৩ টাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য চিঠি পাঠায়। এখন জেলা প্রশাসন থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষকে ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য চিঠি দেবে। এ টাকা ৯০ দিনের মধ্যে জমা করলে জেলা প্রশাসন ওই জমি বন্দরকে বুঝিয়ে  দেবে। এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে ৫০০ একর খাসজমির মূল্য পুনর্নির্ধারণ করে ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকা নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন। তবে ওই জমি প্রতীকী মূল্যে পেতে চবকের করা আবেদন ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় সেই জায়গা এবার নামমাত্র মূল্যে পাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটি বলছে, বে-টার্মিনাল নিয়ে দীর্ঘদিনের ভূমি জটিলতা নিরসন হচ্ছে। জমি পাওয়া গেলে বড় ধরনের অগ্রগতি হবে বে টার্মিনালের।

এদিকে ৮০৩ একর ভূমির মধ্যে কিছু জমি বন বিভাগের অধীনে ছিল বলে তাতে আপত্তি দেয় বন বিভাগ। আর কিছু জমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তিকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে দাবি ওঠে। জটিলতা কাটাতে জেলা প্রশাসন তিন শ্রেণির জমিকে আলাদা করে বন্দোবস্ত দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ৫০০ একর নিষ্কণ্টক খাসজমির জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। এই জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। বন বিভাগের ২৮৭ একর জমির জটিলতা নিরসন করতে পাঠানো হয় আরও একটি প্রস্তাব।

সাম্প্রতিক আলাপকালে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহেল বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বছরে যে পরিমাণ পণ্য হ্যান্ডলিং করতে পারে, শুধু বে-টার্মিনালেই হ্যান্ডলিং করা যাবে তার কয়েকগুণ বেশি। বে-টার্মিনাল প্রকল্পের আওতায় তিনটি টার্মিনাল নির্মিত হবে। এর মধ্যে একটি নির্মাণ ও পরিচালনা করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাকি দুটি টার্মিনাল পিপিপি ভিত্তিতে বিদেশি বিনিয়োগে নির্মাণ করা হবে। এরই মধ্যে দুটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক পোর্ট অব সিঙ্গাপুর অথরিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আলাপ-আলোচনা চলছে। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের আমরা কাজ শুরু করতে পারব।