পরিদর্শন আর নোটিশেই সীমাবদ্ধ অগ্নিঝুঁকিতে থাকা ভবনগুলো

#
news image

ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্ব যেন  পরিদর্শন ও নোটিশ প্রদানেই সীমাবদ্ধ । ফের  কোথাও অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনা ঘটলে সোচ্চার হয় ফায়ার সার্ভিস। শুরু হয় দৌঁড়ঝাপ এবং নোটিশ চালাচালি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। অগ্নিঝুঁকিতে থাকা ভবনগুলো ঠিকই থেকে যায়। তবে ফায়ার সার্ভিস সূত্র গণমাধ্যমকে বলেছে, আইন মানাতে তারা বাধ্য করতে পারেন না। এদিকে এই মরণ ঝুঁকি নিয়ে ঠিকই ভবনগুলো আকাশের দিকে উঠে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, অগ্নিঝুঁকিতে আছে এমন কোনো ভবন বা মার্কেট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে এমন নজির নেই। সর্বশেষ ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন নিহতের পর আবারো সবার টনক নড়েছে। দায়িত্বশীলরাই এখন বলছেন, ওই ভবনে আগুনের ঝুঁকি ছিল। অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। হতাহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন, তাহলে কর্তৃপক্ষ এতদিন কী করেছে? আগুনের ঝুঁকি থাকার পরেও ওই ভবনে কিভাবে এত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিনের পর দিন ব্যবসা করেছে?

গ্রিন কোজি কটেজের এই ভয়াবহতার জন্য অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকাকে দায়ী করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: মাঈন উদ্দিন।  ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি কথা জানান। ডিজি বলেন, এ ভবনের একটি মাত্র সিঁড়ি এবং ভবনটিতে কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান্ট ছিল না। যে কারণে ক্ষতিসহ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ভবনটি ফায়ার সার্ভিসের মনিটরিংয়ের আওতায় ছিল কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের তিনবার নোটিশ করা হয়েছিল। ভবনটি আবাসিক না বাণিজ্যিক ছিল এ প্রশ্নের উত্তরে ডিজি বলে এটি রাজউক ভালো বলতে পারবে।

কাচ্চি ভাই ছাড়াও ওই ভবনে আরও কয়েকটি খাবারের প্রতিষ্ঠান ছিল ওই ভবনে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কিচেনে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারের অতিরিক্ত সিলিন্ডারগুলো সিঁড়িঘরে রাখা হতো, যা আগুনের ঝুঁকি আরো বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সাজসজ্জায় ব্যবহৃত ছিল দাহ্য বস্তু।

গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি গুলশানের একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটনার পর অগ্নিনিরাপত্তা সনদ নেই এমন ভবন ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যৌথ অভিযানে নামে সিটি করপোরেশন, রাজউক ও বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর। গুলশানের ওই ভবনটিতেও ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবনটি পরিদর্শনে গিয়ে নিরাপত্তার অনেক ঘাটতি খুঁজে পান।

ওই সময় তারা গণমাধ্যমকে জানান, ‘ভবনটির ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না। সেফটি প্ল্যান নেয়ার কথা থাকলেও নেয়া হয়নি। ভবনটি অত্যাধুনিক হলেও, এর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীতে অনেক আধুনিক ভবন রয়েছে যেখানে অগ্নিনিরাপত্তা নেই। অথচ কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে এই ভবনগুলো আকাশের দিকে উঠছে। কর্তৃপক্ষ শুধু পরিদর্শন আর নোটিশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে।

নাগরিক প্রতিবেদন

০২ মার্চ, ২০২৪,  4:38 PM

news image

ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্ব যেন  পরিদর্শন ও নোটিশ প্রদানেই সীমাবদ্ধ । ফের  কোথাও অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনা ঘটলে সোচ্চার হয় ফায়ার সার্ভিস। শুরু হয় দৌঁড়ঝাপ এবং নোটিশ চালাচালি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। অগ্নিঝুঁকিতে থাকা ভবনগুলো ঠিকই থেকে যায়। তবে ফায়ার সার্ভিস সূত্র গণমাধ্যমকে বলেছে, আইন মানাতে তারা বাধ্য করতে পারেন না। এদিকে এই মরণ ঝুঁকি নিয়ে ঠিকই ভবনগুলো আকাশের দিকে উঠে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, অগ্নিঝুঁকিতে আছে এমন কোনো ভবন বা মার্কেট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে এমন নজির নেই। সর্বশেষ ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন নিহতের পর আবারো সবার টনক নড়েছে। দায়িত্বশীলরাই এখন বলছেন, ওই ভবনে আগুনের ঝুঁকি ছিল। অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। হতাহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন, তাহলে কর্তৃপক্ষ এতদিন কী করেছে? আগুনের ঝুঁকি থাকার পরেও ওই ভবনে কিভাবে এত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিনের পর দিন ব্যবসা করেছে?

গ্রিন কোজি কটেজের এই ভয়াবহতার জন্য অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকাকে দায়ী করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: মাঈন উদ্দিন।  ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি কথা জানান। ডিজি বলেন, এ ভবনের একটি মাত্র সিঁড়ি এবং ভবনটিতে কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান্ট ছিল না। যে কারণে ক্ষতিসহ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ভবনটি ফায়ার সার্ভিসের মনিটরিংয়ের আওতায় ছিল কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের তিনবার নোটিশ করা হয়েছিল। ভবনটি আবাসিক না বাণিজ্যিক ছিল এ প্রশ্নের উত্তরে ডিজি বলে এটি রাজউক ভালো বলতে পারবে।

কাচ্চি ভাই ছাড়াও ওই ভবনে আরও কয়েকটি খাবারের প্রতিষ্ঠান ছিল ওই ভবনে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কিচেনে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারের অতিরিক্ত সিলিন্ডারগুলো সিঁড়িঘরে রাখা হতো, যা আগুনের ঝুঁকি আরো বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সাজসজ্জায় ব্যবহৃত ছিল দাহ্য বস্তু।

গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি গুলশানের একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটনার পর অগ্নিনিরাপত্তা সনদ নেই এমন ভবন ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যৌথ অভিযানে নামে সিটি করপোরেশন, রাজউক ও বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর। গুলশানের ওই ভবনটিতেও ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবনটি পরিদর্শনে গিয়ে নিরাপত্তার অনেক ঘাটতি খুঁজে পান।

ওই সময় তারা গণমাধ্যমকে জানান, ‘ভবনটির ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না। সেফটি প্ল্যান নেয়ার কথা থাকলেও নেয়া হয়নি। ভবনটি অত্যাধুনিক হলেও, এর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীতে অনেক আধুনিক ভবন রয়েছে যেখানে অগ্নিনিরাপত্তা নেই। অথচ কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে এই ভবনগুলো আকাশের দিকে উঠছে। কর্তৃপক্ষ শুধু পরিদর্শন আর নোটিশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে।