রোজার আগে লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার
নাগরিক প্রতিবেদন
০২ মার্চ, ২০২৪, 4:37 PM
রোজার আগে লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার
কদিন পরই শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। রোজার আগেই প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। চাল, মাছ, মাংস এবং এসবের সঙ্গে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও মসলার দাম। মোটাদাগে এখন বাজারে চিনি, ভোজ্যতেল, গরুর মাংস, মসুর ডাল, অ্যাংকর ডাল, খেসারি ডাল, ছোলা ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতাসাধারণের নাভিশ্বাস উঠেছে। স্বস্তির খবর নেই কোনো বাজারেই। রোজায় দাম কমা নিয়েও শঙ্কায় ক্রেতারা। শাক-সবজির দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে আসতে শুরু করলেও, ফল ও মাছ-মাংসসহ বাড়ছে অন্যান্য পণ্যের দাম। এতে রোজার আগেই বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। তাদের মতে, অসাধু সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে রোজায় আরও অস্থির হয়ে উঠবে নিত্যপণ্যের বাজার।
শুক্রবার (১ মার্চ) কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ও আগানগর এবং রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। রমজানে রোজাদারদের ইফতারির তালিকায় অন্যতম খাবার হচ্ছে ফল। তবে রোজার আগে বাড়তে শুরু করেছে এর দাম। বিক্রেতাদের দাবি, ডলার সংকট ও আমদানি শুল্কের কারণে এ বাড়তি দাম। তার ওপর রমজানের বাড়তি চাহিদা তো রয়েছেই। আর ক্রেতারা বলছেন, রোজার আগেই বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ফলের দাম। ডলার সংকটের অজুহাত দিয়ে অনেক পণ্যেই এতদিন বিক্রেতারা পকেট কেটেছেন ভোক্তার। এবার শুরু হয়েছে ফলের বাজারেও।
পলাশ নামে এক ক্রেতা বলেন, সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়ে গেছে দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফলের দাম। এতে রোজার আগে অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। দাম না কমলে রোজার ফল ছাড়াই হয়তো ইফতার করতে হবে। বাজারে প্রতি কেজি দাবাস খেজুর ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা, জিহাদি খেজুর ২৮০ টাকা, আজওয়া খেজুর ৯০০ টাকা, বড়ই খেজুর ৪৫০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, বিলাসী পণ্যের মতো শুল্ক আরোপ করা হয়েছে খেজুরে। গত এক বছরের ব্যবধানে খেজুর আমদানি খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। পাশপাশি আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে বাড়ছে এর চাহিদা। এতেও বাড়ছে দাম। এছাড়া প্রতি কেজি মাল্টা ৩০০ টাকা, সবুজ আপেল ৩২০ টাকা, নাশপতি ২৬০ টাকা, আনার ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কালো আঙুর ৪০০ টাকা ও কমলা ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, রমজান মাস শুরুর আগেই অস্থির হয়ে উঠা রোজার পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন করে দাম না বাড়লেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব পণ্য। বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। আর প্রতি কেজি ছোলার ডাল ১০০-১১০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৮০-৮৫ টাকা, ডাবলির ডাল ৮৫ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫-১১০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, মোটা দানার মুগ ডাল ১৪৫-১৫০ টাকা, চিকন মুগ ডাল ১৭০-১৮০ টাকা ও খেসারি ডাল ১০৫-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য পণ্যের মধ্যে খোলা আটা ৫০-৫৫ টাকা, প্যাকেট আটা ৬৫-৬৮ টাকা, খোলা ময়দা ৬৫-৭০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৫-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি তো বাজার থেকেই উধাও! এদিকে, নতুন করে দাম নির্ধারণ করে দেয়া ভোজ্যতেলের বাজারে দেখা যায়নি দাম নির্ধারণের প্রভাব। বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭৩ টাকা ও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, এখনও নতুন দামের তেল বাজারে আসেনি। নতুন তেল এলে দাম কমে যাবে। রোজার আগে ঊর্ধ্বমুখী মসলার বাজারও। জিরা বাদে বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম। প্রতি কেজি জিরা ৭৫০ টাকা, এলাচ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪৬০-৪৭০ টাকা, গোলমরিচ ৯০০ টাকা ও লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায়।
এছাড়া বাজারে প্রতি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। দেশি নতুন রসুন কেজি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। আর আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি ২২০-২৪০ টাকা। এছাড়া মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। তবে মাঘের শেষে ফাল্গুনের শুরুতেই বাজারে বাড়ছে সবজির সরবরাহ। এতে কমতে শুরু করেছে বিভিন্ন সবজির দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে সবজির দাম। মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৫০-৭০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, মুলা ২০-২৫ টাকা, শালগম ২০-৩০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, লতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি খিরাই ৫০-৬০ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, টমেটো ৩০-৪০ টাকা, কহি ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০-৪০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৪০-৬০ টাকা, আকারভেদে প্রতিপিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৩৫-৪০ টাকা।
তবে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে করলা ও ঢ্যাড়শের দাম। প্রতিকেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, আর ঢ্যাড়শ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে করলা ও ঢ্যাড়শের সংকট চলছে; তাই দাম বাড়তি। এদিকে, পাইকারিতে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, কলমি ১৫ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা ও লাউ শাক ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা জানান, সবজির দাম কমায় বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। অন্যান্য পণ্যের দাম কমলেও রোজার আগে বাজার কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে আসবে। রাকিব নামে এক ক্রেতা জানান, করলা ও ঢ্যাড়শের দাম আকাশচুম্বী। তবে কমেছে অন্যান্য শাক-সবজির দাম। এতে কিছু স্বস্তি ফিরেছে বাজারে। এদিকে, মাছের বাজারে দেখা যায়, হাতেগোনা কয়েকটি চাষের মাছের দাম কিছুটা কমলেও, চড়া বেশিরভাগ চাষেরও দেশি মাছের দাম। বিক্রেতারা জানান, বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে।
বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ কমায় এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে। কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের রিপন বলেন, বাজারে মুরগি কম আসায় দাম বাড়ছে। তাছাড়া রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় পুলিশসহ চাঁদাবাজদের টাকা দিতে হয়। যার প্রভাব পড়ে দামে। এদিকে, গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। তবে বাড়েনি খাসির মাংসের দাম। বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়। নিত্যপণ্যের অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়। আর বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
নাগরিক প্রতিবেদন
০২ মার্চ, ২০২৪, 4:37 PM
কদিন পরই শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। রোজার আগেই প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। চাল, মাছ, মাংস এবং এসবের সঙ্গে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও মসলার দাম। মোটাদাগে এখন বাজারে চিনি, ভোজ্যতেল, গরুর মাংস, মসুর ডাল, অ্যাংকর ডাল, খেসারি ডাল, ছোলা ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতাসাধারণের নাভিশ্বাস উঠেছে। স্বস্তির খবর নেই কোনো বাজারেই। রোজায় দাম কমা নিয়েও শঙ্কায় ক্রেতারা। শাক-সবজির দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে আসতে শুরু করলেও, ফল ও মাছ-মাংসসহ বাড়ছে অন্যান্য পণ্যের দাম। এতে রোজার আগেই বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। তাদের মতে, অসাধু সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে রোজায় আরও অস্থির হয়ে উঠবে নিত্যপণ্যের বাজার।
শুক্রবার (১ মার্চ) কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ও আগানগর এবং রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। রমজানে রোজাদারদের ইফতারির তালিকায় অন্যতম খাবার হচ্ছে ফল। তবে রোজার আগে বাড়তে শুরু করেছে এর দাম। বিক্রেতাদের দাবি, ডলার সংকট ও আমদানি শুল্কের কারণে এ বাড়তি দাম। তার ওপর রমজানের বাড়তি চাহিদা তো রয়েছেই। আর ক্রেতারা বলছেন, রোজার আগেই বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ফলের দাম। ডলার সংকটের অজুহাত দিয়ে অনেক পণ্যেই এতদিন বিক্রেতারা পকেট কেটেছেন ভোক্তার। এবার শুরু হয়েছে ফলের বাজারেও।
পলাশ নামে এক ক্রেতা বলেন, সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়ে গেছে দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফলের দাম। এতে রোজার আগে অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। দাম না কমলে রোজার ফল ছাড়াই হয়তো ইফতার করতে হবে। বাজারে প্রতি কেজি দাবাস খেজুর ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা, জিহাদি খেজুর ২৮০ টাকা, আজওয়া খেজুর ৯০০ টাকা, বড়ই খেজুর ৪৫০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, বিলাসী পণ্যের মতো শুল্ক আরোপ করা হয়েছে খেজুরে। গত এক বছরের ব্যবধানে খেজুর আমদানি খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। পাশপাশি আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে বাড়ছে এর চাহিদা। এতেও বাড়ছে দাম। এছাড়া প্রতি কেজি মাল্টা ৩০০ টাকা, সবুজ আপেল ৩২০ টাকা, নাশপতি ২৬০ টাকা, আনার ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কালো আঙুর ৪০০ টাকা ও কমলা ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, রমজান মাস শুরুর আগেই অস্থির হয়ে উঠা রোজার পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন করে দাম না বাড়লেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব পণ্য। বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। আর প্রতি কেজি ছোলার ডাল ১০০-১১০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৮০-৮৫ টাকা, ডাবলির ডাল ৮৫ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫-১১০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, মোটা দানার মুগ ডাল ১৪৫-১৫০ টাকা, চিকন মুগ ডাল ১৭০-১৮০ টাকা ও খেসারি ডাল ১০৫-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য পণ্যের মধ্যে খোলা আটা ৫০-৫৫ টাকা, প্যাকেট আটা ৬৫-৬৮ টাকা, খোলা ময়দা ৬৫-৭০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৫-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি তো বাজার থেকেই উধাও! এদিকে, নতুন করে দাম নির্ধারণ করে দেয়া ভোজ্যতেলের বাজারে দেখা যায়নি দাম নির্ধারণের প্রভাব। বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭৩ টাকা ও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, এখনও নতুন দামের তেল বাজারে আসেনি। নতুন তেল এলে দাম কমে যাবে। রোজার আগে ঊর্ধ্বমুখী মসলার বাজারও। জিরা বাদে বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম। প্রতি কেজি জিরা ৭৫০ টাকা, এলাচ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪৬০-৪৭০ টাকা, গোলমরিচ ৯০০ টাকা ও লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায়।
এছাড়া বাজারে প্রতি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। দেশি নতুন রসুন কেজি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। আর আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি ২২০-২৪০ টাকা। এছাড়া মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। তবে মাঘের শেষে ফাল্গুনের শুরুতেই বাজারে বাড়ছে সবজির সরবরাহ। এতে কমতে শুরু করেছে বিভিন্ন সবজির দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে সবজির দাম। মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৫০-৭০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, মুলা ২০-২৫ টাকা, শালগম ২০-৩০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, লতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি খিরাই ৫০-৬০ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, টমেটো ৩০-৪০ টাকা, কহি ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০-৪০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৪০-৬০ টাকা, আকারভেদে প্রতিপিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৩৫-৪০ টাকা।
তবে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে করলা ও ঢ্যাড়শের দাম। প্রতিকেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, আর ঢ্যাড়শ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে করলা ও ঢ্যাড়শের সংকট চলছে; তাই দাম বাড়তি। এদিকে, পাইকারিতে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, কলমি ১৫ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা ও লাউ শাক ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা জানান, সবজির দাম কমায় বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। অন্যান্য পণ্যের দাম কমলেও রোজার আগে বাজার কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে আসবে। রাকিব নামে এক ক্রেতা জানান, করলা ও ঢ্যাড়শের দাম আকাশচুম্বী। তবে কমেছে অন্যান্য শাক-সবজির দাম। এতে কিছু স্বস্তি ফিরেছে বাজারে। এদিকে, মাছের বাজারে দেখা যায়, হাতেগোনা কয়েকটি চাষের মাছের দাম কিছুটা কমলেও, চড়া বেশিরভাগ চাষেরও দেশি মাছের দাম। বিক্রেতারা জানান, বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে।
বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ কমায় এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে। কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের রিপন বলেন, বাজারে মুরগি কম আসায় দাম বাড়ছে। তাছাড়া রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় পুলিশসহ চাঁদাবাজদের টাকা দিতে হয়। যার প্রভাব পড়ে দামে। এদিকে, গত এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। তবে বাড়েনি খাসির মাংসের দাম। বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়। নিত্যপণ্যের অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়। আর বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।