ঝিনাইদহে সয়াবিন চাষ, উতকন্ঠায় কৃষক !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
১৫ এপ্রিল, ২০২২, 7:37 AM
ঝিনাইদহে সয়াবিন চাষ, উতকন্ঠায় কৃষক !
উতপাদিত পন্য বিক্রির অনিশ্চয়তা, নেই কোন প্রক্রিয়াজাতকরনের ব্যবস্থা, পাশাপাশি পর্যাপ্ত বীজ সরবরাহের অনিশ্চয়তা সত্বেও ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ৪০ কৃষকককে সয়াবিন চাষের জন্য একবিঘা করে প্রদর্শণি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং চাষিরা সেখানে বুনেছেন সয়াবিনের বীজ।
বীজের সাথে প্রয়োজনীয় সারও সরবরাহ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর বা ডিএই। কিš‘ দুইদশক বা তার বেশি আগে পামচাষ করে তা আহরন, বিক্রি বা বীজ থেকে ভোজ্যতেল বানাতে না পারার দুর্ভোগের কথা আজও ভোলেননি ঝিনাইদহের চাষিরা। ফলে সয়াবিন চাষে তাদের মনে এখন দেখা দিয়েছে সংশয়ের দোলা।
ঝিনাইদহের সর্বাধিক পান উৎপাদনকারি এলাকা বলে পরিচিতি হরিণাকুন্ডুর কামারখালি গ্রামে কথা হয় কৃষক কামাল হোসেন ও নয়ন হোসেনের সাথে। তারা জানালেন, ইতোপূর্বে না করলেও এবার তাদের প্রত্যেককে এক বিঘার প্রদর্শণি প্লটের জন্য বীজ ও সার দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
তাদের বলা হয়েছে বিঘায় ৮-৯ মন বীজ উৎপাদন হবে যা বাজারমূল্য ৩১-৩২ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। ওইসব ক্ষেত দেখে উৎপাদনও ভালো হবে বলে মনে হলেও সংশয়ে রয়েছেন কৃষকরা। কেননা, উৎপাদিত সয়াবিন বীজ বিক্রির নির্দিষ্ট কোন বাজার জেলার কোথাও গড়ে ওঠেনি। কেননা, উৎপাদিত সয়াবিন বীজ বিক্রির নির্দিষ্ট কোন বাজার জেলার কোথাও গড়ে ওঠেনি। আশেপাশের এলাকায় অর্থাৎ ৫০-৬০ কিলোমিটারের মধ্যে সয়াবিন প্রক্রিয়াজাত করার কোন রিফাইনারির খবরও জানেন না কৃষক। উৎপাদিত ফসলের কি হবে তা ভেবে আকুল তারা।
ঝিনাইদহ সদর ও শৈলকুপা উপজেলার বেশ কয়েকজন চাষি জানালেন, আনুমানিক দুইদশক আগে ডিএই তাদের পামচাষে উদ্বুদ্ধ করে এবং বীজ সরবরাহ দিলে তারা উল্লাসে তা রোপন করেন। কয়েক বছর পর পামগাছগুলো বড় হয়ে ফল ধরতে থাকলে উদ্যোগে ভাটা পড়ে ওই বিভাগের কর্মকর্তাদের। তারা আর চাষিদের কাছে ঘেষেন না।
দেশে শুধুমাত্র কুমিল্লাতেই সয়াবিন থেকে ভোজ্যতেল উৎপাদনের কথা শুনলেও সেটা দুর্গম যোগাযোগের কারণে কাজে লাগাতে পারেন নি তারা। ফলে গাছের ফল গাছেই ঝরতে থাকে বছরের পর বছর। ওইসব এলাকার শিশুদের কাছে খেলনা হিসাবে সুদৃশ্য পামফল সমাদৃত হতে থাকে যা এখনও ভোলেননি চাষিরা।
ডিএই ঝিনাইদহ জেলা অফিস সুত্রে জানা যায়, দেশে ভোজ্যতেল উৎপাদন, স্বাস্থ সুরক্ষায় দেশের মানুষকে নির্ভেজাল ভোজ্যতেল প্রাপ্তিতে সহায়তা করা, সর্বোপরি বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকার সয়াবিন চাষে জোর দিয়েছে।
তারই অংশ হিসেবে তারা ঝিনাইদহ সদর ও কালিগঞ্জে ১০টি করে এবং কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, শৈলকুপা এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ৫টি করে মোট ৪০টি প্লট সয়াবিনচাষে বরাদ্দ পেয়েছেন। বিনা-৭ জাতের সয়াবিনে বিঘাপ্রতি ২৫০ থেকে ২৬০ কেজি এবং হেক্টরে ২ টনের মত উৎপাদন হবে বলে তারা মনে করছেন।
খামারবাড়ি ঝিনাইদহের উপপরিচালক আসগর আলির সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রায় আমদানিনির্ভর ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে, কৃষকের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এবং বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয়ে সয়াবিনচাষ বড় ভ’মিকা পালন করতে পারে বলে সরকার মনে করে।
তাছাড়া, সয়াবিনের খৈল গবাদিপশু, মাছ, হাস-মুরগির খাবারের চাহিদা পূরণ করবে। দেশে সয়াবিন শিল্প গড়ে উঠলে তা কয়েক লাখ কর্মপ্রত্যাশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। তাছাড়া, ফটো ইনসেন্সেটিভ বিধায় সারাবছর এটির চাষ করা যাবে। ৯০ দিনের মৌসুমভিত্তিক সয়াবিনে রোগবালাই কম হওয়ায় তা বেশ পরিবেশসম্মত বলে জানান উপপরিচালক।
প্রখ/ সাদ্দাম
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
১৫ এপ্রিল, ২০২২, 7:37 AM
উতপাদিত পন্য বিক্রির অনিশ্চয়তা, নেই কোন প্রক্রিয়াজাতকরনের ব্যবস্থা, পাশাপাশি পর্যাপ্ত বীজ সরবরাহের অনিশ্চয়তা সত্বেও ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ৪০ কৃষকককে সয়াবিন চাষের জন্য একবিঘা করে প্রদর্শণি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং চাষিরা সেখানে বুনেছেন সয়াবিনের বীজ।
বীজের সাথে প্রয়োজনীয় সারও সরবরাহ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর বা ডিএই। কিš‘ দুইদশক বা তার বেশি আগে পামচাষ করে তা আহরন, বিক্রি বা বীজ থেকে ভোজ্যতেল বানাতে না পারার দুর্ভোগের কথা আজও ভোলেননি ঝিনাইদহের চাষিরা। ফলে সয়াবিন চাষে তাদের মনে এখন দেখা দিয়েছে সংশয়ের দোলা।
ঝিনাইদহের সর্বাধিক পান উৎপাদনকারি এলাকা বলে পরিচিতি হরিণাকুন্ডুর কামারখালি গ্রামে কথা হয় কৃষক কামাল হোসেন ও নয়ন হোসেনের সাথে। তারা জানালেন, ইতোপূর্বে না করলেও এবার তাদের প্রত্যেককে এক বিঘার প্রদর্শণি প্লটের জন্য বীজ ও সার দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
তাদের বলা হয়েছে বিঘায় ৮-৯ মন বীজ উৎপাদন হবে যা বাজারমূল্য ৩১-৩২ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। ওইসব ক্ষেত দেখে উৎপাদনও ভালো হবে বলে মনে হলেও সংশয়ে রয়েছেন কৃষকরা। কেননা, উৎপাদিত সয়াবিন বীজ বিক্রির নির্দিষ্ট কোন বাজার জেলার কোথাও গড়ে ওঠেনি। কেননা, উৎপাদিত সয়াবিন বীজ বিক্রির নির্দিষ্ট কোন বাজার জেলার কোথাও গড়ে ওঠেনি। আশেপাশের এলাকায় অর্থাৎ ৫০-৬০ কিলোমিটারের মধ্যে সয়াবিন প্রক্রিয়াজাত করার কোন রিফাইনারির খবরও জানেন না কৃষক। উৎপাদিত ফসলের কি হবে তা ভেবে আকুল তারা।
ঝিনাইদহ সদর ও শৈলকুপা উপজেলার বেশ কয়েকজন চাষি জানালেন, আনুমানিক দুইদশক আগে ডিএই তাদের পামচাষে উদ্বুদ্ধ করে এবং বীজ সরবরাহ দিলে তারা উল্লাসে তা রোপন করেন। কয়েক বছর পর পামগাছগুলো বড় হয়ে ফল ধরতে থাকলে উদ্যোগে ভাটা পড়ে ওই বিভাগের কর্মকর্তাদের। তারা আর চাষিদের কাছে ঘেষেন না।
দেশে শুধুমাত্র কুমিল্লাতেই সয়াবিন থেকে ভোজ্যতেল উৎপাদনের কথা শুনলেও সেটা দুর্গম যোগাযোগের কারণে কাজে লাগাতে পারেন নি তারা। ফলে গাছের ফল গাছেই ঝরতে থাকে বছরের পর বছর। ওইসব এলাকার শিশুদের কাছে খেলনা হিসাবে সুদৃশ্য পামফল সমাদৃত হতে থাকে যা এখনও ভোলেননি চাষিরা।
ডিএই ঝিনাইদহ জেলা অফিস সুত্রে জানা যায়, দেশে ভোজ্যতেল উৎপাদন, স্বাস্থ সুরক্ষায় দেশের মানুষকে নির্ভেজাল ভোজ্যতেল প্রাপ্তিতে সহায়তা করা, সর্বোপরি বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকার সয়াবিন চাষে জোর দিয়েছে।
তারই অংশ হিসেবে তারা ঝিনাইদহ সদর ও কালিগঞ্জে ১০টি করে এবং কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, শৈলকুপা এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ৫টি করে মোট ৪০টি প্লট সয়াবিনচাষে বরাদ্দ পেয়েছেন। বিনা-৭ জাতের সয়াবিনে বিঘাপ্রতি ২৫০ থেকে ২৬০ কেজি এবং হেক্টরে ২ টনের মত উৎপাদন হবে বলে তারা মনে করছেন।
খামারবাড়ি ঝিনাইদহের উপপরিচালক আসগর আলির সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রায় আমদানিনির্ভর ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে, কৃষকের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এবং বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয়ে সয়াবিনচাষ বড় ভ’মিকা পালন করতে পারে বলে সরকার মনে করে।
তাছাড়া, সয়াবিনের খৈল গবাদিপশু, মাছ, হাস-মুরগির খাবারের চাহিদা পূরণ করবে। দেশে সয়াবিন শিল্প গড়ে উঠলে তা কয়েক লাখ কর্মপ্রত্যাশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। তাছাড়া, ফটো ইনসেন্সেটিভ বিধায় সারাবছর এটির চাষ করা যাবে। ৯০ দিনের মৌসুমভিত্তিক সয়াবিনে রোগবালাই কম হওয়ায় তা বেশ পরিবেশসম্মত বলে জানান উপপরিচালক।
প্রখ/ সাদ্দাম